ময়মুনা বেবা, অশীতিপর বৃদ্ধা। সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা যে কত গভীর, তা আরো একবার বুঝিয়ে দিলেন ভারতীয় এ বৃদ্ধা। ছেলে আব্দুল আনসারিকে (৪৫) বুকে জড়িয়ে ধরে দর্শনা সীমান্তে হাউমাউ করে কাঁদলেন ময়মুনা। কাঁদালেন উপস্থিত সবাইকে। দীর্ঘদিন পর নাড়ি ছেঁড়া ধনকে ফিরে পেয়ে মমতায় সিক্ত করলেন সবাইকে। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া কারাগারে দুই বছর দুই মাস ২০ দিন কারাভোগ শেষে অবশেষে আপন ঠিকানায় ফিরতে পারলো ভারতীয় নাগরিক আব্দুল আনসারি।
ময়মুনা বেবা জানালেন, ছেলেকে দেখতে আট বার গিয়েছি কুষ্টিয়া জেলে। আর ফেরত পেতে ৫ বার এসেছি গেঁদেয় (দর্শনা বিপরীতে ভারতীয় সীমান্ত)। আল্লাহর রহমতে আজ ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। তিন দিনের জেল কিন্তু কারাভোগ দীর্ঘ দুই বছর দুই মাস ২০ দিন। এরপরও দেশে ফিরতে পারছিল না ভারতীয় নাগরিক আব্দুল আনসারী। দেশে ফেরার জন্য কুষ্টিয়া কারাগার থেকে এর আগে দু’দফায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তের জয়নগর চেকপোস্টে এসেও সীমান্তের হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে আবারও কারাগারে ফেরত যেতে হয়েছে তাকে।
জানা গেছে, বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার বাগমারি গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আসছিলেন ভারতের মালদা জেলার গাজল থানার পান্ডুয়া গ্রামের বাসিন্দা আজুল আনসারির ছেলে আব্দুল আনসারি। সেদিন ছিল ২০১৩ সালের ৩ ফেব্র“য়ারি। এরপর চিলমারি সীমান্তে বিজিবির হাতে ধরা পড়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে জেলে যেতে হয় তাকে। আদালত তাকে তিনদিনের কারাদণ্ডাদেশ দেন। কিন্তু বিধিবাম; সেই থেকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারেই দিন কাটছিল আনসারির। তিনদিনের কারাদণ্ড যেন দুই বছর দুই মাস ২০ দিনেও শেষ হচ্ছিল না। অবশেষে গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় দর্শনা আইসিপি চেকপোস্ট সীমান্তে এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আব্দুল আনসারিকে দেশে ফেরত পাঠালো বিজিবি ও দর্শনা ইমগ্রেশন পুলিশ।
Submit Comment