ভৌগলিক অবস্থানঃ
বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তর্গত সীমান্ত শহর দর্শনা। দর্শনা ৩য় শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা।
আয়তন ও জনসংখ্যাঃ
আয়তন ১২.৫০ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমান প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস এই নগরীতে।
মুক্তিযুদ্ধ ও দর্শনাঃ
দর্শনা হানাদান মুক্ত হয় ৪ঠা ডিসেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই এলাকা ছিল ভারতের সাথে নিরাপদে আসা যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। মুক্তিযুদ্ধের সময় টেলিফোন বা টেলিগ্রাফে দর্শনার কোর্ড (ছদ্ম নাম) ছিল DINGA। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হানাদার বাহিনীর সাথে সরাসরি যুদ্ধে দর্শনার অনেকেই শহীদ হয়েছেন। শহীদ স্মরণে এখানে রয়েছে শহীদ মিনার ও সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে শহীদের তালিকা।
ইতিহাস ও ঐতিহ্যঃ
ইতিহাসের পাতা থেকে পাওয়া যায় দর্শনা নামকরণটি ১৮০০ সালের কিছু আগে থেকেই প্রচলিত। ১৭৮৭ সালের ২১ মে মার্চ নদীয়া জেলা গঠিত হয়, তখনও এই স্থানটির নাম দর্শনা ছিল। রেনল্ড গেজেট থেকেও জানা যায় ১৮০০ সালের গোড়ার দিকেও এই অঞ্চলের নাম ছিল দর্শনা। কিভাবে এই স্থানের নাম দর্শনা হলো তা নিয়ে ঐতিহাসিকগণের মধ্য দ্বিধাবিভক্তি থাকলেও সর্বজনীন যে কারণটি পাওয়া যায় তা হচ্ছে “দর্শন” শব্দ থেকে দর্শনা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। মূলত: এই স্হানটি-তে ট্রানজিট পয়েন্ট, ইক্ষু চাষের উপযুক্ত ভুমি, রেলপথের উপযোগী সূচনা কেন্দ্র, নদী মাতৃক পরিবেশ প্রভূত কিছুর দর্শন মিলেছিল। তাই দর্শনা নাকরণের পেছনে উল্লেখিত কারণটি-ই সর্বাধিক সমাদৃত।
দর্শনীয় স্থানঃ
কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডঃ
কেরু এন্ড কোঁ এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম চিনিকল যা বৃটিশ আমলে দর্শনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি এই অঞ্চলের একটি উৎকৃষ্ট পিকনিক স্পট, যেখানে একটি দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট মনোরম গেস্ট হাউজ রয়েছে।
রেল ষ্টেশনঃ
দর্শনায় আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটারাইজড সুবিধাসহ ১ কিলোমিটারের ব্যবধানে ২টি রেলওয়ে ষ্টেশন অবস্থিত। দর্শনা আন্তর্জতিক রেল ষ্টেশন দিয়ে মৈত্রী ট্রেন সরাসরি ভারতে যাতায়াত করছে।
শুল্ক ষ্টেশনঃ
দর্শনায় রয়েছে পূর্ণাঙ্গ কাষ্টমস অফিস ও শুল্কগুদামসহ শুল্ক ষ্টেশন যেখান থেকে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব পাচ্ছে।
ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস চেকপোষ্টঃ
দর্শনা সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছেই রয়েছে কাস্টমস চেকপোষ্টের স্থায়ী অবকাঠামো।
ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতিঃ
স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই দর্শনা ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে প্রসিদ্ধ। এখানে রয়েছে হিন্দোল ও অনির্বাণ নামের দুইটি বিখ্যাত সংস্কৃতিক সংগঠন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
দর্শনায় রয়েছে শতবর্ষ পুরাতন স্কুল। কলেজ-মাদ্রাসাসহ বেশ কিছু বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্র এলাকায় শিক্ষার আলো বিলিয়ে চলেছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলঃ দর্শনা সরকারী কলেজ, মেমনগর বিডি উচ্চ বিদ্যালয়, কেরুজ হাইস্কুল, দর্শনা গালস হাই স্কুল, দর্শনা ডি এস সিনিয়র মাদ্রাসা, অঙ্কুর আদর্শ বিদ্যালয়, দক্ষিন চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলহেরা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেকগুলো ভাল মানের প্রাথমিক বিদ্যালয়।